, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫ , ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত

​গাজার খান ইউনিসে বোমা বিস্ফোরণে ৭ ইসরায়েলি সেনা নিহত

  • আপলোড সময় : ২৫-০৬-২০২৫ ০৩:১০:২৫ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৫-০৬-২০২৫ ০৩:১০:২৫ অপরাহ্ন
​গাজার খান ইউনিসে বোমা বিস্ফোরণে ৭ ইসরায়েলি সেনা নিহত নিহত সাতজন ইসরায়েলি সেনা । ছবি- আল জাজিরা

দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিস শহরে একটি সাঁজোয়া যানে বিস্ফোরণের ঘটনায় সাতজন ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার, ২৪ জুন স্থানীয় সময়ে এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ)। নিহত সেনারা সবাই ইসরায়েলের ৬০৫তম কমব্যাট ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাটালিয়নের সদস্য ছিলেন।

আইডিএফ-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, খান ইউনিস শহরের উপকণ্ঠে একটি পুমা সাঁজোয়া ইঞ্জিনিয়ারিং যান লক্ষ্য করে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা বিস্ফোরক সংযুক্ত করে। এ সময় যানটি শহরের মধ্যে দিয়ে চলাচল করছিল এবং এর ভেতরে সাতজন সেনা অবস্থান করছিলেন। বিস্ফোরণের ফলে সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায় এবং সেনারা আটকা পড়ে যানটির অভ্যন্তরে। আগুন নেভাতে সামরিক বাহিনী তৎপর হলেও, সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং সাতজনই ঘটনাস্থলে নিহত হন।

বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থল থেকে পুরোপুরি পুড়ে যাওয়া সাঁজোয়া যানটি গাজার ভেতর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। IDF-এর প্রাথমিক তদন্ত অনুসারে, হামলাটি পূর্বপরিকল্পিত ছিল এবং বিস্ফোরণটি সংঘটিত হয় আচ্ছাদিত বিস্ফোরক যন্ত্রের মাধ্যমে, যা যানে পূর্বে সংযুক্ত করা হয়েছিল।

এ পর্যন্ত নিহত ছয় সেনার নাম প্রকাশ করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তাঁরা হলেন:

১. লেফটেন্যান্ট মাতান শাই ইয়াশিনোভস্কি (২১), কফার ইয়োনা।
২. স্টাফ সার্জেন্ট রোনেল বেন-মোশে (২০), রেহোভট।
৩. স্টাফ সার্জেন্ট নিভ রাদিয়া (২০), এলিয়াখিন।
৪. সার্জেন্ট রোনেন শাপিরো (১৯), মাজকেরেত বাতিয়া।
৫. সার্জেন্ট শাহার মানোয়াভ (২১), অশ্কেলন।
৬. সার্জেন্ট মায়ান বারুচ পার্লস্টাইন (২০), এশহার।

সপ্তম সেনার নাম এখনও পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি। এদের মধ্যে বেশিরভাগই কনিষ্ঠ এবং সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, পুমা নামের এই ধরনের যান সামরিক প্রকৌশল কার্যক্রমে ব্যবহৃত হয় এবং এটি বিস্ফোরক শনাক্ত ও নিষ্ক্রিয়করণসহ মাটির নিচের সুড়ঙ্গ ধ্বংস করার কাজে ব্যবহৃত হয়। এই ধরণের যান সাধারণত ভারী সুরক্ষিত হয়ে থাকে, তবে এ ঘটনায় সুরক্ষা ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বিস্ফোরণের দিন আরও একটি পৃথক ঘটনায় রকেট-চালিত গ্রেনেড (আরপিজি) হামলার শিকার হন আইডিএফ সেনারা। এই হামলায় দুজন সেনা আহত হন, তবে কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি বলে জানানো হয়েছে।

এদিকে, টাইমস অব ইসরায়েল সহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এই হামলাকে চলমান গাজা সংঘাতের অন্যতম প্রাণঘাতী হামলা হিসেবে উল্লেখ করেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ইতিমধ্যেই ঘটনার জন্য গাজার সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে দায়ী করেছে এবং পাল্টা অভিযান চালানোর ইঙ্গিত দিয়েছে।

বর্তমানে গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বাহিনীর টানা অভিযান চলমান রয়েছে। খান ইউনিস শহর এবং এর আশপাশের এলাকাগুলোকে উচ্চ-সংঘাতপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সেখানে স্থল, বিমান ও ড্রোন অভিযানের মাধ্যমে বিভিন্ন ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল।

আইডিএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনাটি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চলছে এবং সেনাবাহিনীর উচ্চ পর্যায়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমাদের সৈন্যদের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না। আমরা দায়ীদের খুঁজে বের করে প্রতিহত করব।”

বিশ্লেষকদের মতে, এই হামলা ইসরায়েলের সামরিক অবস্থান এবং অভিযানের কৌশল নিয়ে নতুন করে চিন্তার অবকাশ তৈরি করেছে। বিশেষ করে, সাঁজোয়া যান ও প্রকৌশল ইউনিটের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে আইডিএফকে আরও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

সূত্র: আল জাজিরা

নিউজটি আপডেট করেছেন : নিজস্ব প্রতিবেদক

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
​‘এনবিআর সংস্কার’ বিরোধী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর বার্তা

​‘এনবিআর সংস্কার’ বিরোধী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর বার্তা