ইরান-ইসরায়েল সংঘাত
ইসরায়েলের তিন গুপ্তচরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করল ইরান
-
আপলোড সময় :
২৫-০৬-২০২৫ ১১:৩৮:১৪ পূর্বাহ্ন
-
আপডেট সময় :
২৫-০৬-২০২৫ ১১:৩৮:১৪ পূর্বাহ্ন
প্রতিকী ছবি।
মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে তিন ব্যক্তির ফাঁসি কার্যকর করেছে ইরান। দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর উরমিয়ায় আজ বুধবার সকালে এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
অভিযুক্তদের নাম ইদ্রিস আলী, আজাদ শোজাই ও রাসুল আহমদ রাসুল। ইরানের বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে জানানো হয়, অভিযুক্তরা হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্যে দেশে সরঞ্জাম আনার চেষ্টা করছিলেন এবং তাঁরা ইসরায়েলের পক্ষে কাজ করছিলেন বলে অভিযোগ আনা হয়।
তেহরান দাবি করেছে, ওই তিন ব্যক্তি জায়নবাদী রাষ্ট্রের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তি এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে কাজ করছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের মধ্যে ছিল দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র এবং ইরানের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী হামলার প্রস্তুতি নেওয়া। বিচার বিভাগের বিবৃতি অনুযায়ী, অভিযুক্তরা তুরস্ক সীমান্তবর্তী উরমিয়ায় আটক হন এবং দ্রুত বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন।
ফাঁসির আগে তাঁদের নীল রঙের কয়েদি-পোশাকে তোলা ছবি প্রকাশ করেছে ইরানের বিচার বিভাগ। দেশটি প্রায়ই ইসরায়েলসহ অন্যান্য বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার এবং দণ্ড কার্যকর করে থাকে। গত কয়েক দিনে এ ধরনের একাধিক মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান। এর মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের জন্য স্পর্শকাতর তথ্য সংগ্রহের। তাঁর মৃত্যুদণ্ডও সম্প্রতি কার্যকর করা হয়েছে।
গত ১৩ জুন ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ১২ দিনের সামরিক সংঘাত শুরু হয়, যা সম্প্রতি নামমাত্র যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে থামানোর চেষ্টা করা হয়। এই সময়ের মধ্যে ইরান অন্তত ৭০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে, যাঁদের অনেকের বিরুদ্ধেই ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। ইরান জানিয়েছে, সংঘাতের সময় গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করা হবে এবং কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো, বিশেষত অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, ইরানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের উচ্চ হার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যায় ইরান বিশ্বে চীনের পর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।
ঘটনার সময় ও প্রেক্ষাপট থেকে স্পষ্ট, ইরান তার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা জোরদারে এবং ইসরায়েলের প্রভাব মোকাবিলায় কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সংঘাত পরবর্তী সময়ে এমন কার্যক্রম দেশটির নিরাপত্তা নীতি ও কূটনৈতিক অবস্থানকে আরও দৃঢ় করার লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
সূত্র: এএফপি
নিউজটি আপডেট করেছেন : নিজস্ব প্রতিবেদক
কমেন্ট বক্স