
আর্জেন্টিনার ছোট্ট শহর রোসারিও থেকে উঠে আসা এক নীরব বিপ্লবের নাম লিওনেল আন্দ্রেস মেসি। ১৯৮৭ সালের ২৪ জুন জন্ম নেওয়া এই ক্ষুদে জাদুকর আজ কোটি ফুটবলপ্রেমীর হৃদয়ের স্পন্দন, বিশ্ব ফুটবলের এক জীবন্ত কিংবদন্তি।
মাত্র ১১ বছর বয়সে হরমোনজনিত সমস্যা ধরা পড়েছিল মেসির শরীরে, যা তার স্বপ্নযাত্রাকে প্রায় থামিয়ে দিয়েছিল। সেই কঠিন সময়েই ত্রাতা হয়ে পাশে দাঁড়ায় স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনা। সেখান থেকেই শুরু হয় ফুটবল ইতিহাসের এক নতুন সোনালী অধ্যায়।
২০০৪ সালে বার্সার সিনিয়র দলে অভিষেকের পর, মেসি পরবর্তী ১৭ বছর ক্লাবটির অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠেন। রেকর্ড ৭৮০ ম্যাচে তার বুট থেকে এসেছে অবিশ্বাস্য ৬৭২ গোল। বার্সেলোনা এবং পরবর্তীতে পিএসজির হয়ে জিতেছেন অসংখ্য শিরোপা।
মেসির অর্জনের মুকুট:
ক্লাব ট্রফি:
লা লিগা: ১০ বার
কোপা দেল রে: ৭ বার
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ: ৪ বার
ক্লাব বিশ্বকাপ ও সুপার কাপ: একাধিকবার
আন্তর্জাতিক অর্জন (আর্জেন্টিনার হয়ে):
ফিফা বিশ্বকাপ: ২০২২
কোপা আমেরিকা: ২০২১
ফিনালিসিমা: ২০২২
অলিম্পিক স্বর্ণপদক: ২০০৮
অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ: ২০০৫
ব্যক্তিগত সম্মাননা:
ব্যালন ডি’অর: ৮ বার (বিশ্ব রেকর্ড)
ফিফা দ্য বেস্ট: ৩ বার
বিশ্বকাপ গোল্ডেন বল: ২০১৪ ও ২০২২
ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুট: ৬ বার
লা লিগার সর্বোচ্চ গোলদাতা: ৮ বার
মাঠে মেসির নিপুণ ড্রিবলিং, নীরব নেতৃত্ব, আর গোল উদযাপনে আকাশের দিকে তাকিয়ে কৃতজ্ঞতা জানানোর সেই চিরচেনা দৃশ্য আজ ফুটবল সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। তিনি শুধু গোলদাতার নাম নন, তিনি অনুপ্রেরণা ছড়ান।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টার মায়ামি ক্লাবে খেললেও, তার পায়ের জাদু এতটুকুও কমেনি। মেসি আজ নিছকই এক ফুটবলারের নাম নন – তিনি একটি যুগ, একটি দর্শন, একটি আবেগ ও ভালোবাসার প্রতীক। বাংলাদেশেও তার লক্ষ লক্ষ অনুরাগী, যারা তার প্রতিটি খেলায় খুঁজে পান স্বপ্নের প্রতিচ্ছবি।
লিওনেল মেসি যেখানেই থাকুন না কেন, তার পায়ের জাদুতে ফুটবল বিশ্ব নতুন করে স্বপ্ন দেখতে থাকবে, যতদিন ফুটবল থাকবে।