
ঢাকা, ২৪ জুন ২০২৫। আজ মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অন্যতম স্বপ্নদ্রষ্টা ও শিক্ষানুরাগী নবাব স্যার সলিমুল্লাহর ১৫৩তম জন্মবার্ষিকী বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদযাপিত হয়েছে। দেশের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার এই প্রধান পীঠস্থান প্রতিষ্ঠায় যার অনবদ্য ভূমিকা ছিল, সেই মহান ব্যক্তিত্বকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয় তাঁরই নামে প্রতিষ্ঠিত সলিমুল্লাহ মুসলিম হল প্রাঙ্গণে।
সকাল ৯টায় সলিমুল্লাহ মুসলিম হল থেকে শুরু হয় এক বিশাল র্যালি। ব্রিটিশ কাউন্সিল সংলগ্ন ফুলার রোড হয়ে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে র্যালিটি আবার হল প্রাঙ্গণে ফিরে আসে। এই র্যালির নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। তাঁর সাথে ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ ড. আব্দুল্লাহ-আল-মামুন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
হল প্রশাসন জানিয়েছে, এই বিশেষ দিনটি উপলক্ষে দিনব্যাপী ছিল নানা সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক আয়োজন। এর মধ্যে ছিল মঞ্চনাটক, কবিতা আবৃত্তি এবং নবাব স্যার সলিমুল্লাহর জীবন ও যুগান্তকারী অবদানের ওপর একটি তথ্যবহুল সেমিনার। সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীরা গান, আবৃত্তি ও নৃত্যের মনোজ্ঞ পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করে।
স্মরণ করা হয়, নবাব স্যার সলিমুল্লাহ শুধু একজন রাজনৈতিক বা সমাজসেবক ছিলেন না, তিনি ছিলেন এক অতুলনীয় দূরদর্শী শিক্ষাবিদ। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পেছনে তাঁর উদ্যোগ ও ত্যাগ ছিল অবিস্মরণীয়। ঢাকায় একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য তিনি যেমন জমি দান করেছিলেন, তেমনি ব্রিটিশ সরকারের কাছে জোর জনমত গঠনেও অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। ১৯২০ সালে পাস হওয়া ‘দ্য ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট’-এর নেপথ্যে তাঁর সক্রিয় ও নিরলস প্রচেষ্টা ছিল, যার ফলশ্রুতিতে আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের উচ্চশিক্ষা, গবেষণা এবং জাতি গঠনের এক আলোকবর্তিকায় পরিণত হয়েছে।
অনুষ্ঠানমালায় বক্তারা নবাব স্যার সলিমুল্লাহর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং দেশের অগ্রযাত্রায় তাঁর প্রগতিশীল চিন্তাধারা ও শিক্ষাদর্শকে বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার গুরুত্বারোপ করেন।