
তেল আবিবের রাতগুলো এখন কেবল অন্ধকারে নয়, আতঙ্কেও ঢাকা পড়ে আছে। শহরের নিচে নির্মিত ভূগর্ভস্থ বাংকারগুলোর দেয়ালে গা ঠেকিয়ে দিন-রাত কাটাচ্ছে হাজার হাজার ইসরায়েলি নাগরিক। শুক্রবার রাত থেকে শুরু হওয়া ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ধারাবাহিকতায় মধ্যপ্রাচ্যের এই অঞ্চলে শুরু হয়েছে এক অনিশ্চিত, শ্বাসরুদ্ধকর অধ্যায়।
ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসনের জবাবে ইরান যে পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখাবে, সেটি অনুমেয় হলেও এর ভয়াবহতা ধারণারও বাইরে ছিল। ১৩ জুন রাত থেকে শুরু হওয়া ইরানের পাল্টা আঘাতে তেল আবিব, হাইফা, আশকেলনসহ অন্তত ১১টি শহরে আঘাত হেনেছে একের পর এক ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। আকাশজুড়ে সাইরেনের শব্দ যেন যুদ্ধের ডাকে পরিণত হয়েছে। লোকজন প্রাণভয়ে দৌড়ে আশ্রয় নিচ্ছেন বাংকারে—কিন্তু সেখানেও মিলছে না নিশ্চিন্তি।
আইআরএনএর সূত্রমতে, ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল রেজা সাইয়াদ এ বিষয়ে স্পষ্টভাবে বলেন, “দখলীকৃত অঞ্চল ত্যাগ করুন এবং অপরাধী প্রশাসনের মানবঢাল হবেন না। বাংকারগুলো আপনাদের রক্ষা করতে পারবে না।” এই সতর্কবার্তা যে নিছক হুমকি ছিল না, তা বোঝা গেছে হামলার বাস্তবতায়। বাংকারের ভেতরই ধসে পড়েছে ছাদ, কেঁপে উঠেছে মাটি।
ইসরায়েলি নাগরিকদের মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে—বাংকারের অন্ধকারে আতঙ্কিত শিশুদের কান্না, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া মানুষের চিৎকার, এবং সহায়তাহীন বৃদ্ধদের আর্তনাদ। দিনের পর দিন এক টানা সাইরেন বাজায় বহু মানুষ এখন বাড়িতে ফিরতেও ভয় পাচ্ছেন। কাজেই তারা বেছে নিয়েছেন বাংকারেই রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত। কিন্তু ঘুম কি আসে আতঙ্কের মাঝে?
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল–জাজিরা ও বিবিসি জানায়, ইরান পাঁচ দিন ধরে টানা ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি বাহিনী আইডিএফের মতে, অন্তত ৩৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। তেল আবিবের বাসিন্দাদের নিরাপত্তার কথা বলে তাদের সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী। হাইফার তেল পরিশোধনাগার বন্ধ করে দিতে হয়েছে, সেখানে বেশ কয়েকবার হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত তিনজন।
ইরানের সামরিক বাহিনীর হামলায় শুধু সামরিক স্থাপনাই নয়, ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বেসামরিক অবকাঠামোরও। হাসপাতাল, স্কুল, পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, এমনকি শহরের মূল বিদ্যুৎকেন্দ্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আহত ও নিহতদের সঠিক সংখ্যা জানাতে পারছে না আইডিএফ, তবে হোম ফ্রন্ট কমান্ড জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত নিহত অন্তত ২৪ জন—যাদের অধিকাংশই বাংকারের বাইরে ছিলেন।
ইসরায়েলি প্রশাসনের কড়া সমালোচনা শুরু হয়েছে দেশটির ভেতরেই। নাগরিকরা জানতে চাচ্ছেন, এত কোটি ডলার ব্যয়ে নির্মিত বাংকারগুলো যদি রক্ষা না দিতে পারে, তাহলে এই ‘নিরাপত্তা’ ছিল কিসের জন্য? কেন আগেভাগেই আগ্রাসন চালিয়ে এমন ভয়াবহ পাল্টা জবাব আমন্ত্রণ জানানো হলো?
ইসরায়েলের হাইফা শহরের একজন শিক্ষক দুঃখ করে বলেন, “প্রতিদিন সকালে ভাবি, আজ হয়তো বেঁচে ফিরব না। ছাত্রদের না দেখে গেলে কী হবে, সেটাই ভাবি।” চিকিৎসক, সাংবাদিক, এমনকি সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্যরাও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখছেন, ইরানের মতো শক্ত প্রতিপক্ষকে অবজ্ঞা করে ইসরায়েল যে ভুল করেছে, তা আজ চরম মূল্য দিয়ে বুঝতে হচ্ছে।
ইতিমধ্যে মার্কিন বিশেষজ্ঞরাও ইসরায়েলের আগ্রাসনের কৌশল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের মতে, ইরানের প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে খাটো করে দেখা ছিল মারাত্মক ভুল। সেই ভুলের মাশুল এখন গুনছে তেল আবিব, যার প্রতিটি রাস্তায়, প্রতিটি ইঞ্চিতে ছড়িয়ে আছে আতঙ্কের ধ্বনি।
ইসরায়েল চাইলেও এখন আর সহজে এই সংঘাত থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে না—এমনটাই বলছে পর্যবেক্ষকরা। কারণ, তেহরান ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, যতক্ষণ না ইসরায়েল নিজেদের আগ্রাসনের দায় স্বীকার করে এবং দখলদারিত্ব থেকে সরে আসে, ততক্ষণ প্রতিশোধ চলবে।
এই অবস্থায় সাধারণ মানুষের জীবন পরিণত হয়েছে এক দুঃস্বপ্নে। দিনে বেঁচে থাকার চেষ্টা, রাতে বাংকারের অন্ধকারে জীবন বাঁচানোর সংগ্রাম—এটাই এখন ইসরায়েলিদের বাস্তবতা। আর এই বাস্তবতা যতটা ভয়াবহ, ততটাই অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ইঙ্গিত বহন করছে।
ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসনের জবাবে ইরান যে পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখাবে, সেটি অনুমেয় হলেও এর ভয়াবহতা ধারণারও বাইরে ছিল। ১৩ জুন রাত থেকে শুরু হওয়া ইরানের পাল্টা আঘাতে তেল আবিব, হাইফা, আশকেলনসহ অন্তত ১১টি শহরে আঘাত হেনেছে একের পর এক ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। আকাশজুড়ে সাইরেনের শব্দ যেন যুদ্ধের ডাকে পরিণত হয়েছে। লোকজন প্রাণভয়ে দৌড়ে আশ্রয় নিচ্ছেন বাংকারে—কিন্তু সেখানেও মিলছে না নিশ্চিন্তি।
আইআরএনএর সূত্রমতে, ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল রেজা সাইয়াদ এ বিষয়ে স্পষ্টভাবে বলেন, “দখলীকৃত অঞ্চল ত্যাগ করুন এবং অপরাধী প্রশাসনের মানবঢাল হবেন না। বাংকারগুলো আপনাদের রক্ষা করতে পারবে না।” এই সতর্কবার্তা যে নিছক হুমকি ছিল না, তা বোঝা গেছে হামলার বাস্তবতায়। বাংকারের ভেতরই ধসে পড়েছে ছাদ, কেঁপে উঠেছে মাটি।
ইসরায়েলি নাগরিকদের মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে—বাংকারের অন্ধকারে আতঙ্কিত শিশুদের কান্না, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া মানুষের চিৎকার, এবং সহায়তাহীন বৃদ্ধদের আর্তনাদ। দিনের পর দিন এক টানা সাইরেন বাজায় বহু মানুষ এখন বাড়িতে ফিরতেও ভয় পাচ্ছেন। কাজেই তারা বেছে নিয়েছেন বাংকারেই রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত। কিন্তু ঘুম কি আসে আতঙ্কের মাঝে?
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল–জাজিরা ও বিবিসি জানায়, ইরান পাঁচ দিন ধরে টানা ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি বাহিনী আইডিএফের মতে, অন্তত ৩৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। তেল আবিবের বাসিন্দাদের নিরাপত্তার কথা বলে তাদের সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী। হাইফার তেল পরিশোধনাগার বন্ধ করে দিতে হয়েছে, সেখানে বেশ কয়েকবার হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত তিনজন।
ইরানের সামরিক বাহিনীর হামলায় শুধু সামরিক স্থাপনাই নয়, ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বেসামরিক অবকাঠামোরও। হাসপাতাল, স্কুল, পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, এমনকি শহরের মূল বিদ্যুৎকেন্দ্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আহত ও নিহতদের সঠিক সংখ্যা জানাতে পারছে না আইডিএফ, তবে হোম ফ্রন্ট কমান্ড জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত নিহত অন্তত ২৪ জন—যাদের অধিকাংশই বাংকারের বাইরে ছিলেন।
ইসরায়েলি প্রশাসনের কড়া সমালোচনা শুরু হয়েছে দেশটির ভেতরেই। নাগরিকরা জানতে চাচ্ছেন, এত কোটি ডলার ব্যয়ে নির্মিত বাংকারগুলো যদি রক্ষা না দিতে পারে, তাহলে এই ‘নিরাপত্তা’ ছিল কিসের জন্য? কেন আগেভাগেই আগ্রাসন চালিয়ে এমন ভয়াবহ পাল্টা জবাব আমন্ত্রণ জানানো হলো?
ইসরায়েলের হাইফা শহরের একজন শিক্ষক দুঃখ করে বলেন, “প্রতিদিন সকালে ভাবি, আজ হয়তো বেঁচে ফিরব না। ছাত্রদের না দেখে গেলে কী হবে, সেটাই ভাবি।” চিকিৎসক, সাংবাদিক, এমনকি সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্যরাও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখছেন, ইরানের মতো শক্ত প্রতিপক্ষকে অবজ্ঞা করে ইসরায়েল যে ভুল করেছে, তা আজ চরম মূল্য দিয়ে বুঝতে হচ্ছে।
ইতিমধ্যে মার্কিন বিশেষজ্ঞরাও ইসরায়েলের আগ্রাসনের কৌশল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের মতে, ইরানের প্রতিরক্ষা সক্ষমতাকে খাটো করে দেখা ছিল মারাত্মক ভুল। সেই ভুলের মাশুল এখন গুনছে তেল আবিব, যার প্রতিটি রাস্তায়, প্রতিটি ইঞ্চিতে ছড়িয়ে আছে আতঙ্কের ধ্বনি।
ইসরায়েল চাইলেও এখন আর সহজে এই সংঘাত থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে না—এমনটাই বলছে পর্যবেক্ষকরা। কারণ, তেহরান ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, যতক্ষণ না ইসরায়েল নিজেদের আগ্রাসনের দায় স্বীকার করে এবং দখলদারিত্ব থেকে সরে আসে, ততক্ষণ প্রতিশোধ চলবে।
এই অবস্থায় সাধারণ মানুষের জীবন পরিণত হয়েছে এক দুঃস্বপ্নে। দিনে বেঁচে থাকার চেষ্টা, রাতে বাংকারের অন্ধকারে জীবন বাঁচানোর সংগ্রাম—এটাই এখন ইসরায়েলিদের বাস্তবতা। আর এই বাস্তবতা যতটা ভয়াবহ, ততটাই অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ইঙ্গিত বহন করছে।