
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হয়ে শপথ গ্রহণ ছাড়াই দায়িত্ব পালনের চেষ্টায় আবারও আলোচনায় এসেছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। মঙ্গলবার দুপুরে নগর ভবনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি সরাসরি অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া অসত্য ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে জনগণকে মিথ্যা বার্তা দিয়েছেন এবং তিনি শপথ ভেঙেছেন। সেই কারণে তাঁর পদত্যাগ দাবি করেন ইশরাক।
ঘটনার সূত্রপাত নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের এক রায়ের মাধ্যমে। ওই রায়ে আগের গেজেট বাতিল করে ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বৈধ মেয়র হিসেবে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনকে। নির্বাচন কমিশন সে অনুযায়ী ২৭ এপ্রিল সংশোধিত গেজেট প্রকাশ করে এবং তা স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠিয়ে দেয় শপথ অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়নি। এই বিলম্বকেই ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ ও ‘আইনের ব্যত্যয়’ হিসেবে তুলে ধরেন ইশরাক।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে নগর ভবনে এসে ইশরাক হোসেন বলেন, “স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা অসত্য ও বিভ্রান্তিকর। একজন দায়িত্বশীল উপদেষ্টা হিসেবে এই বক্তব্য তার শপথ ভঙ্গ করেছে। জনগণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ এবং আদালতের রায়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শন তাঁর উচিত ছিল। যেহেতু তিনি তা করেননি, তাঁর এই পদে বহাল থাকার নৈতিক অধিকার নেই।”
উল্লেখ্য, গতকাল আসিফ মাহমুদ বলেন, “গেজেটের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় শপথ পড়ানো সম্ভব হয়নি।” তার এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ইশরাক হোসেন প্রশ্ন তোলেন, “এ কথা সত্য হলে ভবিষ্যতে কোনো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি আর কখনো শপথ নেয়ার সুযোগ পাবেন না। বিষয়টি নিছক রাজনৈতিক নয়, এটি প্রশাসনিক দায়িত্বহীনতা।”
ইশরাক আরও বলেন, “নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর নির্বাচন কমিশনের কাজ ছিল শুধু গেজেট প্রকাশ করা। তারা করেছে। এরপর দায়িত্ব পড়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের ওপর। তারা এখনও পর্যন্ত শপথ অনুষ্ঠানের কোনো প্রস্তুতি নেয়নি। বরং নানা অজুহাত তুলে সময়ক্ষেপণ করছে। শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন ছাড়া তাদের আর কোনো কাজ নেই। অথচ তারা প্রশ্ন তুলছে—আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কি না, কিংবা ট্রাইব্যুনালে আরজি সংশোধনের সুযোগ আছে কি না।”
ইতোমধ্যে ইশরাক নগর ভবনের মিলনায়তনে ঢুকে পড়েন এবং ঢাকার ৭০টি ওয়ার্ডের সচিবদের নিয়ে এক সভায় বসেন। বেলা ১টা থেকে শুরু হওয়া এই বৈঠকে তিনি প্রশাসনিক নানা বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন। তার আগের দিন সোমবারও পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শকদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন তিনি। এভাবে শপথ গ্রহণ ছাড়াই কার্যত মেয়রের দায়িত্ব পালন নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন উঠেছে—এটি আইনসঙ্গত কি না, বা সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তার নির্দেশ মানার বাধ্যবাধকতায় রয়েছেন কি না।
বিএনপি নেতার এমন পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে নগর ভবনের সামনে গত এক মাস ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ইশরাকপন্থী কর্মীরা ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে ১৪ মে থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। ১৫ মে থেকে নগর ভবনের সব ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন তাঁরা। আজও সেই তালা খুলে না দিয়ে তারা পূর্বঘোষণা অনুযায়ী দুপুর ১টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যান।
এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি শুধু একজন মেয়রের দায়িত্ব পাওয়ার প্রশ্ন নয়, বরং এটি বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার বৈধতা, স্বচ্ছতা এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের সক্ষমতার প্রশ্ন। শপথ ছাড়াই মেয়রের দায়িত্ব পালন করার নজির তৈরি হলে ভবিষ্যতে স্থানীয় সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা আরও দুর্বল হবে বলে মনে করেন তারা।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমরা আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করেছি। এখন যেহেতু শপথ অনুষ্ঠানের দায়িত্ব স্থানীয় সরকার বিভাগের, তাই তারা যা করছেন বা করছেন না, তা তাদের এখতিয়ারেই পড়ে।”
ঘটনাটি নিয়ে প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে আগামী দিনের রাজনীতি ও প্রশাসনের গতিপথ কোনদিকে মোড় নেয়, তা নির্ভর করছে এই একটি প্রশ্নের ওপর—ইশরাক হোসেন মেয়রের চেয়ারে বসবেন কি না?
ঘটনার সূত্রপাত নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের এক রায়ের মাধ্যমে। ওই রায়ে আগের গেজেট বাতিল করে ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বৈধ মেয়র হিসেবে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনকে। নির্বাচন কমিশন সে অনুযায়ী ২৭ এপ্রিল সংশোধিত গেজেট প্রকাশ করে এবং তা স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠিয়ে দেয় শপথ অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়নি। এই বিলম্বকেই ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ ও ‘আইনের ব্যত্যয়’ হিসেবে তুলে ধরেন ইশরাক।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে নগর ভবনে এসে ইশরাক হোসেন বলেন, “স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা অসত্য ও বিভ্রান্তিকর। একজন দায়িত্বশীল উপদেষ্টা হিসেবে এই বক্তব্য তার শপথ ভঙ্গ করেছে। জনগণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ এবং আদালতের রায়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শন তাঁর উচিত ছিল। যেহেতু তিনি তা করেননি, তাঁর এই পদে বহাল থাকার নৈতিক অধিকার নেই।”
উল্লেখ্য, গতকাল আসিফ মাহমুদ বলেন, “গেজেটের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় শপথ পড়ানো সম্ভব হয়নি।” তার এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ইশরাক হোসেন প্রশ্ন তোলেন, “এ কথা সত্য হলে ভবিষ্যতে কোনো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি আর কখনো শপথ নেয়ার সুযোগ পাবেন না। বিষয়টি নিছক রাজনৈতিক নয়, এটি প্রশাসনিক দায়িত্বহীনতা।”
ইশরাক আরও বলেন, “নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর নির্বাচন কমিশনের কাজ ছিল শুধু গেজেট প্রকাশ করা। তারা করেছে। এরপর দায়িত্ব পড়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের ওপর। তারা এখনও পর্যন্ত শপথ অনুষ্ঠানের কোনো প্রস্তুতি নেয়নি। বরং নানা অজুহাত তুলে সময়ক্ষেপণ করছে। শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন ছাড়া তাদের আর কোনো কাজ নেই। অথচ তারা প্রশ্ন তুলছে—আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কি না, কিংবা ট্রাইব্যুনালে আরজি সংশোধনের সুযোগ আছে কি না।”
ইতোমধ্যে ইশরাক নগর ভবনের মিলনায়তনে ঢুকে পড়েন এবং ঢাকার ৭০টি ওয়ার্ডের সচিবদের নিয়ে এক সভায় বসেন। বেলা ১টা থেকে শুরু হওয়া এই বৈঠকে তিনি প্রশাসনিক নানা বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন। তার আগের দিন সোমবারও পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শকদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন তিনি। এভাবে শপথ গ্রহণ ছাড়াই কার্যত মেয়রের দায়িত্ব পালন নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন উঠেছে—এটি আইনসঙ্গত কি না, বা সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তার নির্দেশ মানার বাধ্যবাধকতায় রয়েছেন কি না।
বিএনপি নেতার এমন পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে নগর ভবনের সামনে গত এক মাস ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ইশরাকপন্থী কর্মীরা ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে ১৪ মে থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। ১৫ মে থেকে নগর ভবনের সব ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন তাঁরা। আজও সেই তালা খুলে না দিয়ে তারা পূর্বঘোষণা অনুযায়ী দুপুর ১টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যান।
এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি শুধু একজন মেয়রের দায়িত্ব পাওয়ার প্রশ্ন নয়, বরং এটি বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার বৈধতা, স্বচ্ছতা এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের সক্ষমতার প্রশ্ন। শপথ ছাড়াই মেয়রের দায়িত্ব পালন করার নজির তৈরি হলে ভবিষ্যতে স্থানীয় সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা আরও দুর্বল হবে বলে মনে করেন তারা।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমরা আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করেছি। এখন যেহেতু শপথ অনুষ্ঠানের দায়িত্ব স্থানীয় সরকার বিভাগের, তাই তারা যা করছেন বা করছেন না, তা তাদের এখতিয়ারেই পড়ে।”
ঘটনাটি নিয়ে প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এমন পরিস্থিতিতে আগামী দিনের রাজনীতি ও প্রশাসনের গতিপথ কোনদিকে মোড় নেয়, তা নির্ভর করছে এই একটি প্রশ্নের ওপর—ইশরাক হোসেন মেয়রের চেয়ারে বসবেন কি না?