হেফাজতের ওপর নৃশংসতার এক যুগ।

আপলোড সময় : ০৫-০৫-২০২৫ ০২:৫২:৫০ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৫-০৫-২০২৫ ০২:৫২:৫০ অপরাহ্ন
২০১৩ সালের ৫ মে গভীর রাত। ঢাকার শাপলা চত্বরের মঞ্চে আগুনঝরা বক্তব্য দিচ্ছেন হেফাজতে ইসলামের নেতারা। কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে লাখো নেতাকর্মীর জমায়েত। চারপাশ ঘিরে আছে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যরা। অবস্থানকারীদের বারবার সরে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে হ্যান্ডমাইকে। হঠাৎ বিদ্যুতের আলো নিভে গেল। চারপাশে ভুতুড়ে অন্ধকার। এর মধ্যেই তিন বাহিনীর সদস্যরা ফাঁকা গুলি আর কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে শুরু করেন। থেমে থেমে ভেসে আসছিল সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দ। প্রায় ১০ মিনিট ধরে এমন পরিস্থিতির এক পর্যায়ে মঞ্চের মাইক বন্ধ হয়ে যায়। তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গুলি, কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে এগোতে শুরু করেন শাপলা চত্বরের দিকে। সৃষ্টি হয় এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতির। শাপলা চত্বর ট্র্যাজেডিতে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর নির্যাতনে নিরস্ত্র হেফাজত নেতাকর্মীরা নিহত ও আহত হন। অথচ সেই ঘটনার পর উল্টো তাদের বিরুদ্ধেই আওয়ামী লীগ সরকার ৮৪ হাজার ৯৭৬ জনের নামে ৮৩টি মামলা দায়ের করে, যার মধ্যে ৩ হাজার ৪১৬ জনের নাম উল্লেখ ছিল। এসব মামলায় বহু নিরীহ আলেম ও কর্মী বছরের পর বছর জেলজুলুমের শিকার হন, যদিও বেশিরভাগ অভিযোগের সত্যতা মেলেনি। ঢাকার চার থানায় দায়ের হওয়া ৪৮ মামলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩৬টি পল্টন থানায়, যার মধ্যে ২২টি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে ও ১৪টি এখনো তদন্তাধীন। মতিঝিল থানার ৬ মামলার ২টি নিষ্পত্তি হয়েছে, ২টি তদন্তাধীন এবং ২টি উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশে আছে। রমনা থানার ২ মামলার একটিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে, আরেকটি তদন্তাধীন। শাহবাগ থানার ৪টি মামলাই এখনো তদন্তাধীন রয়েছে। শাপলা চত্বরের ঘটনায় ট্রাইব্যুনালে মামলা: হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীদের হত্যা-নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গত ১২ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা (মিস কেস) হয়েছে। মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারসহ নয়জনকে আসামি করা হয়েছে। বাকিরা হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহিদুল হক ও পুলিশের সাবেক উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোল্যা নজরুল ইসলাম। এদের মধ্যে শামসুল হক টুকু, এ কে এম শহিদুল হক, জিয়াউল আহসান ও মোল্যা নজরুল ইসলাম অন্য মামলায় গ্রেফতার রয়েছে। ট্রাইব্যুনাল বাকি ৫ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।

সম্পাদকীয় :

সম্পাদক ও প্রকাশক : শামীম আহমেদ


অফিস :

অফিস : গুলফেশা প্লাজা (১০ম তলা), বড় মগবাজার, ঢাকা-১২১৭

ইমেইল : info@shomoybhela.com

মোবাইল : +880 1335-149005