
ভারত কি সত্যিই পাকিস্তানে প্রবাহিত সিন্ধু ও এর দুটি শাখা নদ–নদীর পানি আটকে দিতে পারবে? ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গত মঙ্গলবার এক ভয়াবহ হামলার জেরে নয়াদিল্লি সিন্ধু অববাহিকার ছয় নদীর পানি বণ্টন নিয়ে দুই দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক একটি চুক্তি স্থগিত করায় অনেকের মনেই এ প্রশ্ন উঠছে।
১৯৬০ সালে এই চুক্তি করে ভারত-পাকিস্তান। এরপর পারমাণবিক শক্তিধর দেশ দুটি দুবার যুদ্ধে জড়ালেও চুক্তিটি স্থগিত হয়নি। তাই এতদিন আন্তসীমান্ত পানি ব্যবস্থাপনার এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়ে এসেছে এই চুক্তি
ভারতের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তার জন্য এই চুক্তিটি খুবই গুরুপূর্ণ। চুক্তিটির মাধ্যমে কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের বরফ গলে। পাকিস্তান এই চুক্তি স্থগিত করলে ভারতের যে ভায়বহ পরিণতি হতে পারে তা এক প্রতিবেদনে তুলে ধরেছেন পাকিস্তানের জিও নিউজের সাংবাদিক আমির মির।
তিনি বলেন, সিমলা চুক্তি থেকে সরে আসলে পাকিস্তান আর ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে আবদ্ধ থাকবে না। যার ফলে কাশ্মীর ইস্যুতে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ বা মধ্যস্থতার পথ খুলে যাবে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন বা অন্য যে কেনো দেশ কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতা করতে পারবে। যা ভারতের জন্য মোটেও সুখকর হবে না।
হামিদ মির আরও বলেন, চুক্তিটি স্থগিতের ফলে লাইন অব কন্ট্রোল (এলওসি) স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুদ্ধবিরতির রেখা (সিএফএল) হিসেবে বিবেচিত হবে, যা কাশ্মীরের স্বাধীনতা আন্দোলনের পক্ষে সহায়ক হবে। এর মানে তখন পাকিস্তান অধ্যুষিত কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামীরা যদি অস্ত্র নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আবর্তিত হয়, তখন পাকিস্তানকে কোনো দোষারোপ করতে পারেব না ভারত।
আন্তর্জাতিকভাবে কোনো আইন নেই যা যুদ্ধবিরতির রেখা অতিক্রম করা নিষিদ্ধ।
এই চুক্তি স্থগিতের ভয়াবহতা সম্পর্কে বলতে গিয়ে হামিদ মির আরও বলেন, ভারত হয়তো ভাবতেও পারছে না, শিমলা চুক্তি স্থগিত হলে কী ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে।
ভারতের তথাকথিত ‘পানি অবরোধ’ হয়তো পাকিস্তানকে একেবারে শুকিয়ে ফেলবে না, কিন্তু পাকিস্তানের ‘শিমলা অবরোধ’র পর ভারত নিজেই সবচেয়ে বড় ক্ষতিগ্রস্ত হবে।